ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী (র) – এর জীবনী ও লিখিত বইসমূহ
জালালুদ্দীন সুয়ুতী ( ‘সুয়ুতী’ বা ‘সিয়ুতী’) প্রসিদ্ধ গ্রন্থকার , বিখ্যাত তাফসিরকারক , মুহাদ্দিস , ফকিহ , সাহিত্যিক , কবি, ইতিহাসবিদ এবং তিনি হিজরি নবম শতকের সমসাময়য়িক কালের একজন মুজাদ্দিদ ছিলেন । তাঁর নাম আব্দুর রহমান। উপনাম আবুল ফদল। পিতার নাম কামাল উদ্দিন। কিন্তু তিনি সারাবিশ্বে জালাল উদ্দিন সুয়ুতি নামে পরিচিত।
তাঁর নসবনামা হল ‘আবুল ফদল জালাল উদ্দীন আবদুর রহমান ইবনুল কামাল, আবূ বকর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সা-বিক্বুদ্দীন ইবনুল ফখর ওসমান ইবনে নাযিরুদ্দীন মুহাম্মদ ইবনে শায়খ হুমাম উদ্দীন আস সুয়ুতি আশ শাফেয়ী। ।
জন্মঃ
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) ৮৪৯ হিজরির ১ রজব ; ১৪৪৫ ঈসাই ৩ অক্টোবর তারিখে মিশরের কায়রোতে জন্ম গ্রহণ করেন । তার পিতা তখন কায়রোতে খলিফার প্রাসাদে ইমামের দায়িত্ব পালনরত ছিলেন । তার জন্ম স্থান সম্পর্কে আরেকটি তথ্যবর্ণনা এভাবে উল্লেখ আছে যে , তিনি মিশর -এর ‘আস সুয়ূত’ বা ‘আল-আসইয়ূত’ নামক স্থানে জন্ম গ্রহণ করেন ।
‘ইবনুল কুতুব’ উপাধিতেও তিনি সবিশেষ পরিচিত ছিলেন । কথিত আছে যে , হাফিজ জালালুদ্দীন সুয়ুতী যেদিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন সেদিন তার জন্মের আগে তার পিতার বিশেষ প্রয়োজনে তার মা কুতুবখায় একখানি কিতাব আনতে গিয়েছিলেন । কিতাবটি খুজে বের করতে থাকলেন তিনি । ঘটনাক্রমে তখন সেখানেই ইমাম সুয়ুতীর জন্ম হয় । তিনি তার পিতার কুতুবখানায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন বিধায় তাকে ইবনুল কুতুব উপাধিতে ভূষিত করা হয় ।
তার পিতা শায়খ কামালুদ্দীনও ছিলেন একজন বিশিষ্ট আলেম ও কাজী । তিনি ‘আসয়ুত্ব’ থেকে কায়রোয় চলে আসলে সেখানে ‘ইবনে তুলুন জামে মসজিদ-এ খতিব হিসেবে দাতিত্ব পালন করেন । পাশা পাশি শায়খুনী জামে মসজিদ সংলগ্ন মাদরাসায় তিনি ‘ফিকহ’-এর ওস্তাদ হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন । হিজরি ৮৫৫ সালে তিনি ইন্তিকাল করেন । এ সময় জালালুদ্দীন সুয়ুতীর বয়স ছিল পাঁচ কিংবা ছয় বছর।
ইলম অর্জনঃ
বাবার মৃত্যুর পর তাঁর অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তার পিতার ঘনিষ্ঠ এক সুফি বন্ধু । জালালুদ্দীন সুয়ুতী পড়াশোনায় খুব মনোযোগী ও মেধাবী ছিলেন । মাত্র আটবছর বয়সে তিনি কুরআনুল কারীম হিফ্জ করেন। যেমন তিনি নিজেই বলেছেন-
قال ونشأت يتيما- فحفظت القران ولى دون ثمانى حسنين ثم حفظت العمدة ومنهاج الفقه والاصول والفية ابن مالك
অর্থ: আমি এতিম হিসেবে জীবন শুরু করি। প্রথমে আমি আটবছর বয়সে কুরআনুল কারীম হিফ্জ করি। অতঃপর উমদাহ ‘মিনহাজুল ফিক্হ’ ‘আল উসূল’ এবং ‘আল ফিয়াতু ইবনে মালিক’ মুখস্ত করি।
ইমাম সুয়ুতি জগতবিখ্যাত উলামায়ে কেরামদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন- ورزقت التبحر فى سبعة علوم অর্থ: আমি সাতটি বিষয়ে পারদর্শীতা অর্জন করি। তা হলো- তাফসির, হাদিস, ফিক্হ, নাহু, মায়ানী, বায়ান এবং মানতিক। এছাড়াও তিনি ফারাইয ও আরবি ভাষাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর ইলম অর্জন করেন। তিনি দুইল হাদিসের হাফিজ ছিলেন।
ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ুতি কুরআন হাদিসের ইলম অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তিনি শ্যাম, হিজাজ, ইয়ামন, হিন্দ, মাগরিব তাকরুরসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন। হাদিস শাস্ত্রে তিনি বদরুল মুহাদ্দিসীন আল্লামা বদরুদ্দিন আইনি হানাফি (রাহ), হাফিজ সাখাভী (রাহ) সহ অন্যান্য বিখ্যাত মুহাদ্দিসদের নিকট শিক্ষা লাভ করেন ।
তিনি তাসাউফ তথা আধ্যাত্নবাদে দীক্ষিত হতে প্রসিদ্ধ সুফি বুজুর্গ কামালুদ্দিন মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ মিসরি শাফেয়ি (রাহ) এর আশ্রয়ে উপনীত হন এবং তার মুবারক হাতে খিরকায়ে তাসাউফ পরিধান ও খালকে খোদার ফয়েজ (অনুকম্পা) লাভে ধন্য হন ।
তিনি জালাল উদ্দিন মহল্লী, ইলমুদ্দিন বুলকিনী, শিহাবউদ্দিন আশ শারমাসাহী, ইমাম মানাভী, ইমাম শামনী, ইমাম আল কাফিজীসহ অসংখ্য উলামায়ে কিরামদের কাছ থেকে ইলম অর্জন করেন। তাঁর ছাত্র শা’রানী বলেছেন- ইমাম সুয়ুতি ছয় শতাধিক শায়খের কাছ থেকে ইলম অর্জন করেছেন।
একটি তথ্যের অবতারণাঃ
আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) এর জীবনী লেখকদের কেউ কেউ এরকম উল্লেখ করেছেন যে , তিনি ( আল্লামা সুয়ুতী ) হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানীর ছাত্র ছিলেন । তিনি হাদিস শাস্ত্রে ইবনে হাজার আসকালানীর (রাহঃ) নিকট থেকে সনদ প্রাপ্ত ছিলেন ।
আর কেউ কেউ এর বিপরীত মত উল্লেখ করে বলেন যে, এরুপ মন্তব্য সঠিক নয় । যেহেতু হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী ৮৫২ হিজরিতে ইন্তেকাল করেছেন আর আল্লামা সুয়ুতী জন্ম গ্রহণ করেছেন ৮৪৯ হিজরিতে । সেহেতু এ সন তারিখ বিবেচনা অনুসারে হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানীর মৃত্যুর সময় জালালুদ্দীন সুয়ুতীর বয়স ছিল মাত্র ৩ বছর ।
এ বয়সে ইবনে হাজার আসকালানীর ছাত্র হওয়ার দাবী উত্তাপন অমুলক । তবে এ কথা উল্লেখ্য যে, তিন বছর বয়সে তার পিতা তাকে ইবনে হাজার আসকালানীর (রহ) মজলিসে উপস্থিত করেছিলেন ।
কর্মজীবনঃ
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তখনকার মিসরের সর্বোচ্চ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপিনার মাধ্যমে কর্মজীবনের সূচনা করেছিলেন । তিনি ৮৭১ হিজরিতে জামেয়া শায়খুনিয়া (কায়রো)-তে শায়খুল হাদিস পদ অলংকৃত করেন । সেখানে তিনি পাঠদান কালীন সময়ে কাজী আয়াজের আশ শিফা-এর পাঠ মজলিসে পূর্ণরূপে সমাপ্ত করেন ।
ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূতী দীর্ঘদিন যাবৎ প্রসিদ্ধ ‘খানক্বাহ্-ই বায়বার্সিয়া’র ‘ওয়াক্বফ এস্টেট’-এর মহাব্যবস্থাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তদানীন্তনকালে এটা মিশরের সর্বাপেক্ষা বড় খানক্বাহ্ ছিলো; কিন্তু যখন সুলতান মুহাম্মদ ক্বাতবাঈ মিশরের শাসন-ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন ভণ্ড সূফীদের একটি দল সুলতানের নিকট ইমাম সুয়ূত্বীর বিপক্ষে কিছু অমূলক অভিযোগ করেছিলো।
এতদ্ভিত্তিতে সুলতান তাঁকে উক্ত পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। এ অপসারণের পর থেকে তিনি দুনিয়া ও এর সমস্ত সম্পর্ক থেকে নিজে নিজে অবসর গ্রহণ করেন এবং লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। এমন একাকীত্বের মধ্যে ইমাম সুয়ূতী তাঁর বেশীরভাগ কিতাব রচনা করেন।
তাঁর এ একাক্বীত্ব ও জ্ঞানগত ই’তিকাফ তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অব্যাহত ছিলো। এ বিশ বছর ব্যাপী সময়সীমায় তিনি লোকজনের সাথে মেলামেশা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমনকি তাঁর ঘরের নীল নদের দিকে খোলা হয় এমন জানালাগুলোও বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
আর নিজের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে ইসলামী ও আরবী জ্ঞানচর্চা, এগুলো নিয়ে চিন্তা-গবেষণা এবং গ্রন্থ-পুস্তক রচনা ও প্রণয়নের মধ্যে অতিবাহিত করেন।
আখলাকঃ
আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) অত্যন্ত পরহেযগার তাকওয়াবান খোদাভীরু ছিলেন । দ্বীনি খেদমতে কাটিয়েছন জীবনের বেশির ভাগ সময় । নাজমুদ্দিন আল কুরী الكوكب السائرة باعيان المائة العاشر গ্রন্থে বলেছেন- চল্লিশ বছর বয়স হবার পর থেকে তিনি দুনিয়ার আরাম-আয়েশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতেন।
তিনি একাকী ও নির্জনতাকে পছন্দ করতেন। এমনকি পরিবার-পরিজন থেকেও মুখ ফিরিয়ে নেন, যেন তিনি কাউকে চিনেন না। ঘরের দরজা জানালা পর্যন্ত খুলতেন না। বিভিন্ন বিত্তশালী আমিরগণ মূল্যবান উপঢৌকন নিয়ে তাঁর জিয়ারতে আসতেন। কিন্তু তিনি তা ফিরিয়ে দিতেন। সদা-সর্বদা কিতাবাদী গবেষণাতে মশগুল থাকতেন।
তার কাছে লেখালেখি , বই-পুস্তক, গ্রন্থ আর গবেষণা কর্মে নির্জনতাই উৎকৃষ্ট সহায়ক মনে হতো । মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ‘রওদাতুল মিকয়াছ’ নামক স্থানে অবস্থান করেন।
তীসার্রোফ ও কারামতঃ
আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) কুরআন ও সুন্নাহ’র নুরানি স্রোতে অবগাহনের মধ্য দিয়ে আল্লাহ ও তার রাসুল (দঃ)-এর এত্তেবায় নিজেকে সমর্পিত করেছিলেন । তার রুহানি ক্ষমতা ছিল খুবই প্রবল । আল্লামা জালাল উদ্দিন ইমাম সুয়ূতী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ৭০ বারের বেশি জাগ্রত অবস্থায় দেথেছি (সুবাহানাল্লাহ)।
আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর এক বিশেষ খাদেম ছিল নাম তার মুহাম্মদ ইবনে আলী হাব্বাক । ইবনে আলী হাব্বাক বর্ণনা করেন যে, একদিন দুপুরে খাবারের পর জালালুদ্দীন সুয়ুতী আমাকে বললেন, তুমি আমার জীবদ্দশায় আমার উপস্থিতিতে কিংবা অনুপস্থিতিতে কখনও কারো কাছে এ রহস্যের কথা যদি ব্যক্ত না কর, তাহলে আল্লাহ চাহেতো আজ আসরের সালাত তোমাকে মক্কা শরিফে পড়ার ব্যবস্থা করবো – ইনশাআল্লাহ ।
আমি বললাম , আলহামদুলিল্লাহ । ঠিক আছে, তাই হবে । তিনি বললেন , তাহলে চোখ বন্ধ করো । আমি চোখ বন্ধ করলাম । সুয়ুতী (রহ) আমার হাত ধরে প্রায় ২৭ কদম সামনে অগ্রসর হলেন । তারপর তিনি বললেন , চোখ খোল । আমি চোখ খুললাম । চোখ খুলে দেখি আমরা দু’জন ‘বাবে মুয়াল্লা’য় দাঁড়িয়ে আছি ।
এরপর হেরেম শরিফে পৌছে আমরা তাওয়াফ করলাম । পবিত্র জমজমের পানি পান করলাম । আসরের সালাত আদায় করলাম । আল্লামা সুয়ুতী (রহ) বললেন , মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার বান্দার দু’আ কবুল করলেন । আমাদের জন্য জমিন সংকোচিত হয়ে গেল । ইন্নাল্লাহা আ’লা কুল্লী শায়য়িন কাদির । এ যে আল্লাহ তায়ালার কুদরতময় অনুগ্রহ ! ইবনে আলী হাব্বাক বলেন , অতঃপর জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রহ) বললেন, – হেরেমের আশে পাশে আমাদের পরিচিত মিশরের অনেক লোক রয়েছে । আমাদেরকে তারা চিনতে পারেনি । তুমি ইচ্ছে করলে আমার সঙ্গেই চলো, অথবা হাজীদের সঙ্গে চলে এসো ।
আমি বললাম , আপনার সঙ্গেই যাব । সুতরাং আমরা রওয়ানা হলাম । ‘বাবে মুয়াল্লা’ পর্যন্ত যাওয়ার পর জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রহ) আমাকে বললেন, চোখ বন্ধ করো । আমি চোখ বন্ধ করলাম । এ অবস্থায় ৭ কদম সামনে অগ্রসর হলে তিনি বললেন , এবার চোখ খোল । আমি চোখ খুললাম । খুলে দেখি আমরা মিশরে পৌছে গেছি ।
ইমাম সুয়ুতি (র) লিখিত বইসমূহ:
ইমাম সুয়ুতি (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বিভিন্ন বিষয়ের উপর অসংখ্য কিতাবাদী রচনা করেছেন। আল ইদরূসী النور السافرة গ্রন্থে বলেছেন-
ووصلت مصنفاته نحو الستمائة مصنفا-
অর্থ: তাঁর রচনাবলী ছয়শত পর্যন্ত পৌঁছেছে। নিম্নে তাঁর বিখ্যাত কয়েকটি কিতাবের নাম প্রদত্ত হলো-
১। আল ইতকান ফি উলুমিল কুরআন।
২। আদ দুররুল মানসুর ফি তাফসিরি বিল মা’ছুর ।
৩। লুবাবুন নুকুল ফি আসবাবিন নুজুল ।
৪। তাফসির আল জালালাইন: এ গ্রন্থটি ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতীর একক রচনা নয় । জালালুদ্দীন সুয়ুতীর বিশিষ্ট শিক্ষক যার নাম ছিল জালালুদ্দীন মহল্লী , তিনি আল কুরআনের তাফসিরের একটি গ্রন্থ রচনার কাজে হাত দিয়েছিলেন । তিনি আল কুরআনের শেষার্ধের তাফসির প্রথমে সমপন্ন করেন । পরে আল কুরআনের প্রথমার্ধের তাফসির লিখতে মনোনিবেশ করেন । সুরা ফাতিহার তাফসির শেষ করার পর তিনি আর বাকী অংশের তাফসির সম্পন্ন করে যেতে পারেননি । এর আগেই তার জীবন সমাপ্তির ডাক এসে যায় । একপর্যায়ে একদিন তিনি পরলোক গমন করেন । প্রিয় শিক্ষকের রেখে যাওয়া এই অসমাপ্ত তাফসির গ্রন্থ রচনার বাকী কাজটুকু নিষ্ঠার সাথে বিচক্ষণতায় সম্পন্ন করেন আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী। কথিত আছে যে, আল্লামা সুয়ুতী এটি চল্লিশ দিনে সমপন্ন করেছিলেন । গ্রন্থটি যেহেতু দুই জালালের দ্বারা রচিত হয়েছে, তাই মুসলিম বিশ্বে এটি তাফসিরে জালালাইন নামে পরিচিতি লাভ করে । আর এ কথা সত্য যে, জালালুদ্দীন সুয়ুতী যদি এর বাকি অংশের প্রণয়ন না করতেন হয়তো তা প্রকাশের মুখ দেখতো কিনা কে জানে।
৫। হাশিয়াতু আলা তাফসিরি বায়জাবী ।
৬। শারহু ইবনি মাজাহ ।
৭। তাদরিবুর রাওয়ী ।
৮। শারহুস সুদুর বি শারহে হালিল মাওতা ওয়াল কুবুর ।
৯। আল বুদুরুস সাফিরাহ আন উমুরিল আখিরাহ ।
১০। আত তিব্বুন নাবাওয়ী ।
১১। আল আশবাহ ওয়ান নাজারাহ ।
১২। আল হাবি লিল ফাতাওয়া ।
১৩। তারিখুল খুলাফা ।
১৪। ইসআফুল মুবাত্তা বি রিজালিল মুয়াত্তা ।
১৫। আল আয়াতুল কুবরা ফি শারহি কিসসাতিল ইসরা ।
১৬। আল জামিউস সাগির মিন হাদিসিল বাশিরিন নাজির ।
১৭। আল জামিউল কাবির ।
১৮। আলখাসাইসুল কুবরা।
১৯। আল হাবাইকু ফি আখবারিল মালাইক ।
২০। ইহয়াউল মাইয়িত বি ফাজাইলি আহলি বাইত ।
ওফাত শরীফঃ
ইসলামের এই মহান খাদিম, মুজাদ্দিদে দ্বীন ইমাম আল্লামা জালালুদ্দিন আস-সুয়ুতি (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) ৯১১ হিজরি সনের ১৯ জামাদিউল উলা, ১৫০৫ ঈসাই, শুক্রবার রাতে ‘রওদাতুল মিকয়াস’ নামক স্থানে ইন্তেকাল করেন। ইন্তেকালের সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বৎসর ১০ মাস ১৮ দিন।